খিদে

দেড়পেট খিদে আর বিড়াল-ভাব নিয়ে তুই বসেছিলি
বিড়ালের উপর, ইঁদুরকানীর আড়ালে
বিষহীন ঢোঁড়ার একবুক যন্ত্রনা হয়ে।
ঢোঁড়াটা জানতেই পারেনি তোর বেড়াল-ভাব আসলে
খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের অধুনান্তিক বেশ।
তুই ঈগলের ক্ষিপ্রটায় তুলে নিলি তাকে
কিছুই করা গেল না;
কারণ, আজর আর নমরুদের ষড়যন্ত্রকে
কিম্বা আগুনের খিদেকে খানখান করে
ইব্রাহিমের মতই উঠে এলি মঞ্জেনিকে চড়ে।

এটা যে তুই পারলি, তা কি তোর অধুনান্তিক বেশের জন্য নয়?

----------------//----------------


খিদে, একটি ইউনিভার্সাল চাহিদা। একে উপেক্ষা করে সাধ্য কার? আপনাকে বলতেই হবে, কারও নেই। কার্ল মার্কস লিখেছিলেন, মানব সভ্যতার ইতিহাস হল শ্রেণী সংগ্রামের ইতিহাস। সেই সংগ্রামের সুচনার ভিত্তি কী? মানতেই হবে প্রথম এবং প্রধান ভিত্তি হল এই খিদে। এবার যদি বলা হয়, এই খিদের ভিত্তিকাল কী? এবারও আপনাকে মানতে হবে, এ জগতে জীবের সুচনাকালই হল এর ভিত্তিকাল। তাই জীবদেহের ক্রম বিবর্তনের যে ইতিহাস তার মূলে রয়েছে একটি সম্পর্ক; খাদ্য-খাদকের সম্পর্ক। সুতরাং জীবদেহের ক্রম বিবর্তনের ইতিহাস হল খাদ্য-খাদকের সম্পর্কের ইতিহাস। আর এই সম্পর্কের অন্য নাম জীবন সংগ্রাম।

শুধু মানুষ নয়, পৃথিবীর প্রত্যেকটি জীব বিবর্তনের (জীবন সংগ্রামের) প্রতিটি বাঁকে নিজের চাহিদা পুরণের হাতিয়ার পাল্টেছে। সুচনা করেছে নতুন যুগের। ক্ষুণ্ণিবৃত্তির তালিকায় সংযোজিত হয়েছে নতুন খাদ্য। খাদ্য-খাদকের সম্পর্কে এসেছে বিবর্তন। অধুনান্তিক বিড়াল আজ সেই রকমই এক (বিবর্তনের) বাঁকে এসে দাঁড়িয়েছে। তার খাদ্য তালিকায় সংযোজিত হয়েছে জলঢোঁড়া। ইদুর-বেড়ালের যে খাদ্য-খাদকের সম্পর্ক তাতে এই সংযোজনই বিড়ালকে অধুনান্তিক করে তুলেছে। এই সংগ্রামে সে জয়ী হয়েছে। আজর ও নমরুদের ষড়যন্ত্রকে  খানখান করে ইব্রাহিম যেমন জীবনের, ভালোবাসার জয়কে প্রতিষ্ঠা দিয়েছেন, দিয়েছেন নতুন আলোর সন্ধান, অধুনান্তিক বিড়াল তার বাচ্চার আধপেটে বিকল্প খাদ্য তুলে দিয়ে নতুন আলোর সন্ধান দিয়েছে।

সোমবার, 30 জুলাই 2012

8.54.51 অপরাহ্ন


Comments

Popular Posts